বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র সূর্য। যার আলোয় দিনরাত শ্বাস নিয়ে বেঁচে আছে পৃথিবী। প্রথমবারের মতো সেই সূর্যের বলয়ের মধ্যে থেকে ঘুরে এলো নাসার সৌরযান, এমনটাই জানিয়েছে নাসার বিজ্ঞানীরা।
নাসার তরফে বলা হয়েছে, এর আগে সূর্যের এত কাছে কোনো যান পৌঁছাতে পারেনি। সূর্যের বলয়ের মধ্যে ঢুকে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে পার্কার নামের নাসার সেই সৌরযানটি।
বলা যায়, একেবারে সূর্যের উঠনে গিয়ে ঘুরে এসেছে সৌরযানটি। মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটল। এই প্রথম পৃথিবীতে তৈরি কোনো মহাকাশযান তো বটেই, কোনো বস্তু ছুঁয়ে দেখল সূর্যকে!
এবার চাঁদের মতোই উম্মোচিত হবে সূর্যের রহস্য। পৃথিবীর নিকটতম উপগ্রহ চাঁদকে এতদিনে অনেকটাই চিনে ফেলা গিয়েছে। কাছের গ্রহ মঙ্গল। সেখানেও এখন যাতায়াত করা যায়। নাসার এই কৃতিত্বে উৎসাহিত বিজ্ঞানীরা।
সূর্যের বহিরাবরণ, যাকে ‘করোনা’ বলা হয়। প্রবল উত্তাপ সেখানে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পার্কার যেখানে পৌঁছেছিল সেখানে উত্তাপ দুই মিলিয়ন কেলভিন। অর্থাৎ ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭২৬ দশমিক আট পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই উত্তাপে সেকেন্ডে একশ কিলোমিটার বেগে করোনার ভেতর তথ্য সংগ্রহ করেছে পার্কার।
গত এপ্রিল মাসে পার্কার প্রথম সেখানে পৌঁছাতে পেরেছিল বলে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। সেই সময় পার্কার যে তথ্য সংগ্রহ করেছিল, এতদিনে তা বিজ্ঞানীদের হাতে এসে পৌঁছেছে। ২০১৮ সালে পৃথিবী থেকে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল পার্কার।
নাসার বিজ্ঞানীদের ধারণা, এর মধ্যে অন্তত তিনবার সূর্যের বলয়ের মধ্যে ঢুকেছে পার্কার। সব মিলিয়ে দশবার সূর্যের বলয়ে যানটি প্রবেশ করবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। ২০২৫ সাল পর্যন্ত পার্কার তার অন্বেষণ চালিয়ে যাবে।
সূর্যবিজ্ঞানের ইতিহাসে পার্কারের এই কাজ অভূতপূর্ব। এর আগে কোনো যান সূর্যের এত কাছে পৌঁছাতে পারেনি। সূর্যের চুম্বকীয় ক্ষেত্রের বিষয়ে এতো তথ্য এর আগে বিজ্ঞানীদের হাতে আসেনি। কীভাবে সূর্য গোটা সৌরমণ্ডলকে চালিত করে, সে বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পার্কারের তথ্য থেকে মিলবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী দিনে যা পরীক্ষানিরীক্ষা করে শুধু সূর্য নয়, ছায়াপথের অন্য নক্ষত্রকেও চেনা যাবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
সূত্র: নাসা
Discussion about this post