বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
‘আমাগামি হ্যাম হ্যাম’ একটি রোবোট বিড়ালের নাম, যেটা আদর করে মানুষের আঙ্গুল কামড়ে ধরে। একটি স্মার্ট বাল্ব যা মানুষের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারে। অথবা একটি আধুনিক মাস্ক, যা মানুষকে সকল ধরণের দূষণ থেকে বাঁচাতে পারে!
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের নাভাদায় শুরু হয়েছে কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শো (সিইএস) ২০২২ -এ এমনই সব ভবিষ্যৎ পণ্যের মুখোমুখি হয়েছেন দর্শনার্থীরা।
ভবিষ্যৎ দুনিয়ার ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলো কেমন হবে? মানুষকে সেই ধারণা দিতেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বলা যায়, এক্ষেত্রে আয়োজকরা অনেকটাই সফল। সিইএস’তে এসে সেই কথা স্বীকার করেছেন দর্শনার্থীরাও।
আমাগামি হ্যাম হ্যাম
এবারের প্রদর্শনীর সবচেয়ে অদ্ভুত পণ্যের নাম ‘আমাগামি হ্যাম হ্যাম’। এই রোবোট বিড়ালটি আসলে একটি আদুরে খেলনা। যেটা জীবন্ত বিড়ালের মতোই মানুষের আঙ্গুল কামড়ে ধরবে।
জাপানের ইউকাই ইঞ্জিনিয়ারিং বলছে, বিড়ালের আদুরে কামড় খাওয়ার গোপন ইচ্ছা থাকে বিড়াল প্রেমীদের। সে জন্যই আমাগামি হ্যাম হ্যামকে বানানো হয়েছে। পরবর্তীতে আরও কিছু সেবা জুড়ে দেওয়া হবে এতে।
স্মার্ট বাল্ব
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টার্টআপ কোম্পানি সেংলেড বাজারে এনেছে একটি স্মার্ট বাল্ব। যা সাধারণ লাইটের মতোই ঘরে আলো দেবে। পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করে ফলাফল জানিয়েছে দেবে। রাডার সেন্সর এবং ব্লুটুথ ব্যবহার করে সেই তথ্য পাবে মানুষ।
সেংলেড বলছে, শরীরে কোনো ডিভাইস সংযুক্ত না করেই এই বাল্বের সাহায্যে মানুষের হৃদস্পন্দন, শরীরের তাপমাত্রা এবং ঘুমের ধরণ ট্রাক করা যাবে। এমনকি শারীরিক নড়াচড়া ট্র্যাক করতেও সক্ষম বাল্বটি। যাদের বয়স বেশি তাদের শরীরের অবস্থা জানতে এই পণ্যটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে কোম্পানিটি।
পণ্যটি নিয়ে এখনও কাজ করছেন উদ্যোক্তারা। তাই এর মূল্য সম্পর্কে এখনও কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাজারে বাল্বটি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কারকপ্টার
স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আধুনিক যানবহন নিয়েও মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। তাই ফরাসি কোম্পানি ম্যাকা এ বছর বাজারে আনছে হাইড্রোজেন চালিত ‘কারকপ্টার’। এই কারকপ্টার মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকলেও চলার সময় সেটি আসলে রাস্তার ওপর দিয়ে উড়ে যাবে দ্রুত গতিতে। আপাতত রেসের মাঠেই কারকপ্টারগুলোর পরীক্ষানিরীক্ষা চলবে বলে জানিয়েছে ম্যাকা।
কোম্পানিটি বলছে, সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার। এটি কোনো কার্বন নির্গমন করে না এবং সম্পূর্ণরূপে পুনর্ব্যবহারযোগ্য। নতুন রেসিং স্পোর্টে এই বাহনের চাহিদা বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিবেশবান্ধব এই বাহনের দাম প্রায় সাত লাখ ইউরো।
এয়ারক্সম মাস্ক
করোনা মহামারির সবচেয়ে পরিচিত এবং আলোচিত বস্তুর নাম মাস্ক। এবার সেই মাস্ককেই ভবিষ্যতের রূপ দিলো এয়ারক্সম কোম্পানি। এটিও মূলত একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্য। চলতি বছরে তারা বাজারে আনছে ‘এয়ারক্সম মাস্ক’। অবশ্য অনেকে বলছেন, এটির নাম ‘স্টার ওয়ারস মাস্ক’। বিখ্যাত সিনেমা স্টার ওয়ারসেও এমনই সব আধুনিক মাস্কের দেখা মিলে।
এই মাস্ক বাতাসের দূষণ, ব্যাকটেরিয়া এমনকি করোনভাইরাসকেও আটকাতে পারবে দাবি প্রতিষ্ঠানটির। এতে একটি ‘সক্রিয়’ ফিল্টার রয়েছে যা অতি সূক্ষ্ম কণা এবং রোগজীবাণু বা দূষণকারী কণাকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই বাজারে পাওয়া যাবে মাস্কটি। দাম পড়বে ৩৪০ ডলার।
প্রদর্শনী এমন হাজার হাজার আধুনিক পণ্যের দেখা মিলবে। যারমধ্যে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি, আরও দ্রুত গতির কম্পিউটার, বাড়ির কুকুরের জন্য ট্রাকিং বেল্ট, এমনকি রোবট কুকুরও পাওয়া যাবে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এই বার্ষিক প্রদর্শনী চলবে আগামী শনিবার (৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল।
Discussion about this post