শিক্ষার আলো ডেস্ক
নাটোর জেলার কাদিরাবাদস্থ দয়ারামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বাউয়েট) চালু হলো মোবাইল অ্যাপস এন্ড গেম টেস্টিং ল্যাব। আইসিটি বিভাগের ‘মোবাইল গেম এবং অ্যাপ্লিকেশনের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধীনে এই ল্যাবটি স্থাপন করা হয়। এ ল্যাবে স্থান পেয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। প্রতি ব্যাচে ১৫ জন শিক্ষার্থী এ ল্যাব ব্যবহার করে নতুন নতুন মোবাইল অ্যাপস ও গেম তৈরির সুযোগ পাবেন।
শনিবার( ২৩ জুলাই ) ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ল্যাবের উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ল্যাব উদ্বোধন শেষে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১৩ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে পিছিয়ে পড়া স্বল্পোন্নত দেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ওই সময়ে প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উচ্চাভিলাসী রুপকল্প প্রদান করা হয়। বিগত সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরলস পরিশ্রমে দেশ এখন সারাবিশ্বে প্রযুক্তিতে অগ্রগামী। এদেশের সোনার মানুষকে প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত চালু করা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়। সারাদেশে ১৩ হাজার স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এভাবেই ২০৪১ সালের প্রযুক্তি নির্ভর মেধাবী উন্নত দেশ গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারুণ্যের অফুরান শক্তিতে প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং মাইক্রো প্রসেসর নিয়ে কাজ করছে দেশের প্রযুক্তি খাত। আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে শীর্ষ প্রযুক্তির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লেকচার হলে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বাউয়েট এখন থেকে উদ্ভাবনী সংস্কৃতিতে যুক্ত হলো। এখানে মোবাইল অ্যাপস, গেম টেস্টিং ল্যাবসহ তিনটি ল্যাবে শিক্ষার্থীরা তাঁদের উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগাতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে এখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ল্যাব, রোবোটিক ল্যাব ও সাইবার সিকিউরিটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এসব ল্যাব ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সৃষ্টিশীল হয়ে উঠবেন। তারা চাকরি করবেন না, অন্যদের চাকরির সুযোগ করে দেবেন। তিনি আরও বলেন, এখানকার মোমিনুলসহ দুজন শিক্ষার্থী টিম মহাকাশের সদস্য হিসেবে বিশ্ব জয় করেছেন।মানবকল্যাণে এখানকার শিক্ষার্থীরা আরও দক্ষ হয়ে উঠবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৩টি প্রকল্পে ৩০ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়ারও ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২১ বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
ল্যাবের আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ যন্ত্রপাতি ঘুরে দেখার সময় বাউয়েট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২১ বিজয়ী টিম মহাকাশের সদস্য মোমিনুল হক ল্যাবের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দেন এবং তাদের উদ্ভাবিত গেম দেখান।
এসময় নাটোর-১ এর সংসদসদস্য শহীদুল ইসলাম বকুল, বাউয়েট উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক মোঃ মোস্তাফা কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার লে. কর্নেল শেখ শামীম হোসেন (অব.), কাদিরাবাদ সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারেক জুবায়ের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৪০টি মোবাইল অ্যাপস অ্যান্ড গেম টেস্টিং ল্যাবপ্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার ৪২৫ জনের প্রশিক্ষণ, ২৮৯টি মোবাইল অ্যাপস ও গেম ডেভেলপমেন্ট এবং ৩৩টি জেলা পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপস টেস্টিং সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া ৮টি বিভাগীয় পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপস ও গেম টেস্টিং সেন্টার, ৯টি মোবাইল অ্যাপস ও গেম ডেভেলপমেন্ট মার্কেটিং অ্যান্ড প্রমোশন, ৪ জন পরামর্শক সেবা ক্রয় এবং প্রাইস কন্টিজেন্সি ব্যয় মেটানো হচ্ছে।
Discussion about this post