হৃদয় বিশ্বাস
পৃথিবীতে মানুষের তথা মানবসভ্যতার প্রথম পদক্ষেপ ফেলার বহু বছর আগেই ( আনুমানিক ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে ) নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ডাইনোসর প্রজাতি। ডাইনোসরের বিলুপ্তির কারণ কমবেশ আমাদের সবারই জানা। এরকম কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলোঃ একটি পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তন আর আরেকটি বিশাল বিশাল সব উল্কাপিন্ডের আঘাত।
কিছুদিন ধরে পত্রপত্রিকায়সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা খবর ছড়িয়ে পড়ছে যে “চাঁদে পাওয়া গেছে ডাইনোসরের ধ্বংসাবশেষ।” কেউ কেউ একে আরো চিত্তাকর্ষক ও বিবর্ধিত করে এমনভাবে ব্যবহার করছে যেন চাঁদে সত্যিকার অর্থেই মিলেছে ডাইনোসরের সন্ধান। তাহলে খবরটি মিথ্যা না সঠিক? অদ্ভুত হলেও সত্য যে খবরটি সঠিক হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং চাঁদে মিলতে পারে ডাইনোসরের দেহাবশেষ।
এখন কথা হলো ডাইনোসর চাঁদে পৌছলো কিভাবে? মানুষের চেয়েও অত্যধিক বুদ্ধিমান কোনো প্রাণী কী এদের নিয়ে গিয়েছিল সেখানে ? নাকি এরা আগে থেকেই চাঁদে বসবাস করছিল ? এরকম অনেক মিথ বা প্রশ্নের জন্ম হওয়ার অনেক আগে থেকেই জ্যোতিঃপদার্থবিদ ও নভোচারী’রা এর পেছনের গল্পটার ব্যাখ্যা করেছেন।
ডাইনোসরদের বিলুপ্তির প্রধান কারণ ছিলো উল্কাপাত। বিশাল বিশাল উল্কাপিন্ডের আঘাতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রকাণ্ড সব গর্তের অস্তিত্ব রয়েছে। কোনো প্রকাণ্ড উল্কাপিন্ডের আঘাতে ডাইনোসরসহ পৃথিবীর ভূ-খণ্ডের বিভিন্ন অংশ ছিটকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে,কিছু খন্ড হয়ত আবার পৃথিবীতেও ফিরে আসে। কিন্তু মহাশুণ্যে পৌঁছাতে হলে তো মুক্তিবেগের (প্রতি সেকেন্ডে ১১.২ কি.মি. দূরত্ব অতিক্রম) প্রয়োজন । প্রচন্ড এই বেগের জন্য তো অনেক শক্তির প্রয়োজন, সেটা আসলো কিভাবে? বিজ্ঞানীরা এরও ব্যাখ্যা করেছেন। কোনো প্রকাণ্ড উল্কাপিন্ডের পৃথিবীকে দ্রুত গতিতে আঘাতের কারণে মুক্তিবেগ পেয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে ভেদ করে মহাশুন্যে ছিটকে পড়ে ভূ-খণ্ড; যেখানে হয়ত ডাইনোসরও ছিলো। আর তাদের সেই ছিটকে পড়া দেহের ধ্বংসাবশেষ-ই পাওয়া যায় চাঁদে।
আবার, আমাদের একমাত্র উপগ্রহ চাঁদও কিন্তু বিশাল উল্কাপিন্ডের আঘাতের দ্বারা ভূ-খণ্ডের ছিটকে পড়া অংশ নিয়েই গঠিত।
উল্কাপিণ্ডের আঘাতে মহাশুণ্যে ছিটকে পড়া অনেক ভূ-খণ্ডের অংশ হয়ত এখনো ছড়িয়ে আছে আমাদের সৌরজগতে তথা মহাশুণ্যে।
হয়ত মঙ্গলেও আছে আমাদের ভূ-খণ্ডের অংশ। পৃথিবীর চরম পরিবেশে বেঁচে থাকা কোনো অনুজীব হয়ত এখনো বেঁচে আছে ছিটকে পড়া ওই অংশগুলোর ভেতর।
এরকমই কোনো উল্কাপিন্ডের দ্বারাই হয়তো আমাদের পৃথিবীতেও প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল অথবা অনুজীবের আগমণ হয়েছিল দূর মহাশূন্যের কোনো গ্রহ থেকে। [iflscience.com অবলম্বনে]
Discussion about this post