নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউটে তৈরি করা ফ্রি ওয়াই-ফাই হটস্পটের গতি বাড়ছে। বর্তমানের ১০ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ড) থেকে ব্যান্ডউইথ বাড়িয়ে ২০ এমবিপিএস করা হচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট কেটে গেলেই বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে বলে জানা গেছে।
সরকার দেশের ৫৮৭টি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউটে ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন তৈরি করছে। এরইমধ্যে দেশের ৪৮৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কলেজ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই জোন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটে ১০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই জোন তৈরির কাজ আটকে আছে। এগুলো তৈরির কাজ শেষ হলে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হতে পারে। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজেই সম্পন্ন হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই জোন তৈরির কাজ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছ, ৫৮৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিভাগের ১৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগের ৩৫, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০৭, বরিশাল বিভাগের ৪৫, খুলনা বিভাগের ৮৩, রাজশাহী বিভাগের ৮৫, রংপুর বিভাগের ৫৬ ও সিলেট বিভাগের ৩৩টি।
এই প্রকল্পে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। দেশের ৮টি বিভাগে সরকারি কলেজ ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে পৃথকভাবে ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপন ও যন্ত্রাংশ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে। ওয়াই-ফাই হটস্পট জোন তৈরির পরে দেখা হবে এর প্রভাবটা কী। কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে। দেখা হবে বিজনেস কেস। বিজনেস কেস দাঁড় করিয়ে উদ্যোগটি টিকিয়ে রাখার কৌশল বের করা হবে। কারণ, দুই বছর পরে এর খরচ কে দেবে, তা ঠিক করা না গেলে, এই প্রকল্প বেশিদিন টিকবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই হট স্পট তৈরির কাজ শেষ হলে বেসরকারিগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে। আমরা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদ রাখবো না। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের আগ্রহ আছে কিনা তাও বুঝতে হবে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথম দুই বছর ফ্রি ব্যান্ডউইথ দেবো। পরে এগুলোর ব্যয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দেশের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। ৫১০টি প্রাথমিক স্কুলে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এগুলোর কাজ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে সব প্রাথমিক স্কুলে ডিজিটাল ক্লাস রুম তৈরি করা হবে।’
জানতে চাইলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন বলেন, ‘৫৮৭টির মধ্যে আরও ১০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হতে বাকি রয়েছে। এতদিনে শেষ হয়ে যেতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তা শেষ করা যায়নি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ওয়াই-ফাই স্পট তৈরির কাজ শেষ করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ওয়াই-ফাই স্পট তৈরির পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে আগ্রহের বিষয়টি জানতে পারলে পরবর্তী কোনও ফেজে তা তৈরি করে দিতে পারবো। কারণ, আমাদের প্রচুর ব্যান্ডউইথ অব্যবহৃত রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১০ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ দেওয়া হচ্ছে। এটা বাড়িয়ে ২০ এমবিপিএস করার পরিকল্পনা করেছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা এটা করে ফেলবো বলে আশা রাখি।’
Discussion about this post