ক্যারিয়ার ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ার নারী শিক্ষার্থীদের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত বিষয়ে স্কলারশিপ দেবে ব্রিটিশ কাউন্সিল। উইমেন ইন স্টেম (সাইন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ম্যাথম্যাটিকস) স্কলারশিপের আওতায় যুক্তরাজ্যের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা আর্লি অ্যাকাডেমি ফেলোশিপ অর্জনের সুযোগ প্রদান করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে আবেদনের সময়সীমার ভিন্নতা রয়েছে।
বৈচিত্র্য, ভিন্নমত ও উদ্ভাবন নিশ্চিত ও প্রসার করতে স্টেম খাতে নারীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। নারীর অংশগ্রহণ কেবল লিঙ্গবৈষম্য কমিয়ে আনবে না, তাদের অনন্য দক্ষতা কর্মক্ষেত্রকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে; যা সর্বোপরি সমাজকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি জেন্ডার অ্যাসেসমেন্ট ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশের স্টেম পেশাজীবীদের মধ্যে মাত্র ১৪ শতাংশ নারী। গবেষণায় দেখা যায়, সরকারি প্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষার্থীদের স্টেম বিষয়ে ভর্তির হার মাত্র ৩৮ শতাংশ, আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির হার ৪৫ শতাংশ।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর স্টেম বিষয়ে অধ্যয়নরত নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ২৫টি স্কলারশিপ ঘোষণা করা হয়েছে। কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, অ্যাংলিয়া রাসকিন ইউনিভার্সিটি, গ্রিনিচ ইউনিভার্সিটি, দ্য ইউনিভার্সিটি অব সাউথ্যাম্পটন ও কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি—যুক্তরাজ্যের এই পাঁচ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে স্কলারশিপের সুযোগ থাকছে। যুক্তরাজ্যের সমৃদ্ধ স্টেম খাতে অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজ দেশে গবেষণা ও উদ্ভাবন এগিয়ে নিতে এবং এই খাতে নিজেদের ক্যারিয়ার গঠন করতে বৃত্তিপ্রাপ্তদের দক্ষ করে তুলবে স্কলারশিপটি।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ কাউন্সিল দিচ্ছে এক মিলিয়ন পাউন্ডের অনুদান, আবেদন করুন এখনি
আবেদন যোগ্যতা
স্টেম বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এমন নারী শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে, তাদের দেখাতে হবে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন এবং তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারীদের স্টেম-এ ক্যারিয়ার গড়তে অনুপ্রাণিত করতে আগ্রহী।
এই স্কলারশিপে আবেদনের জন্য আরও যেসব যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে স্নাতক ডিগ্রি, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, উচ্চশিক্ষায় আগ্রহ, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং সেপ্টেম্বর/অক্টোবর ২০২৪ – ২০২৫ -এর মধ্যে পুরো একাডেমিক সময়কাল সম্পূর্ণ করার আগ্রহ।
সুযোগ সুবিধাসমূহ
প্রার্থীরা আর্থিক সহায়তা যেমন- টিউশন ফি, উপবৃত্তি, ভ্রমণ ব্যয়, ভিসা, স্বাস্থ্য কাভারেজ ফি লাভ করবেন; ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রে সাহায্যসহ বিভিন্ন রকম সুবিধা পাবেন; মায়েদের জন্য থাকবে বিশেষ যতœ; প্রার্থীরা যুক্তরাজ্যের যেগুলো স্টেম ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় সেই বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন।
এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের লক্ষ্য নারী শিক্ষার্থীদের স্টেম ক্ষেত্রে সুযোগ বৃদ্ধি। জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো)-র তথ্য অনুসারে, বিশ্বে ৩০ শতাংশের কম নারী গবেষক আছেন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় স্টেম-সংশ্লিষ্ট বিষয় বেছে নেন। যেহেতু একজন সাধারণ স্টেমকর্মী অন্যদের তুলনায় দুই-তৃতীয়াংশ বেশি উপার্জন করেন, তাই নারীদের স্টেমে ক্যারিয়ার গড়ার সমান সুযোগ দিলে তা বেতনে লৈঙ্গিক বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৫-‘লিঙ্গসমতা অর্জন এবং সব নারী ও কন্যাশিশুর ক্ষমতায়ন’ অর্জনে উলেখযোগ্য অবদান রাখবে।
আবেদন প্রক্রিয়া
স্কলারশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরাসরি আবেদন করা যাবে।
আবেদন প্রক্রিয়া এবং নির্দেশাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন ।
Discussion about this post