ক্যারিয়ার ডেস্ক
জার্মান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখার খরচ একদম ফ্রি করতে মনোনিবেশ করছেন। স্বভাবতই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের জন্য পাড়ি জমান জার্মানিতে। ইংরেজিতে প্রায় পনেরশটি প্রোগ্রামে চালু আছে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের জন্য। বাংলাদেশিদের জন্য জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার সবচেয়ে সেরা উপায় হচ্ছে বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করা।
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার বৃত্তি: ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য জার্মানিতে যথেষ্ট পরিমাণে বৃত্তির সুযোগ আছে। তার মধ্যে গত এক দশক ধরে জার্মানিতে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশিদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন হচ্ছে জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস বা ডাড। ডাড বৃত্তির দারুণ সুযোগ-সুবিধাসহ বৈচিত্রপূর্ণ বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্র থাকায় যেকোন ক্ষেত্রের শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমত কোর্স বেছে নিতে পারে। কোর্সের ওপর ভিত্তি করে মাস্টার্সের মেয়াদ এক থেকে দুই বছর ও পিএইচডি’র মেয়াদ ৩৬ থেকে ৩৮ মাস পর্যন্ত হয়।
বৃত্তিটির সবচেয়ে ভালো দিকটি হচ্ছে আবেদনের জন্য এখানে কোন দেশ ও বয়সের সীমাবদ্ধতা নেই। এই বৃত্তির আওতায় স্বাস্থ্য বীমার সাথে সাথে ব্যাচেলর কোর্সে প্রতি মাসে ৭৫০ ইউরো এবং মাস্টার্সে ১০০০ ইউরো দেয়া হয়। বৃত্তির অন্তর্ভুক্ত অনুদানে আবাসন খরচও মিটে যায়, তাই বলতে গেলে কোন ধরণের বাড়তি খরচই আর প্রয়োজন হয় না।
এখন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্সের জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে।
জার্মানিতে বৃত্তির জন্য যোগ্যতা: স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই স্নাতক পাশ হতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় বছর একাডেমিক পিরিয়ড দেখানো যায়। ভাষাগত দক্ষতার ব্যাপারটি বাছাইকৃত কোর্সের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ডাড বৃত্তির জন্য আবেদন করার সর্বনিম্ন আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোর ৬।
মাস্টার্সের জন্য বৃত্তির আবেদন করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এখানে অন্যান্য প্রয়োজনীয় একাডেমিক ডকুমেন্টের পাশাপাশি অন্তত দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা দেখাতে হয়।
জার্মানিতে বৃত্তির জন্য আবেদন করবেন যেভাবে: জার্মানিতে বৃত্তির জন্য আবেদনের সেরা উপায় হলো অনলাইনে আবেদন। আবেদনপত্র পাওয়া যায় ডাড এর ওয়েবসাইট-এ। সেখানে অনলাইনেই পুরো আবেদন পত্র পূরণ করতে হয়। এবার ইউরোপাস স্পেসিমেন ফর্ম ডাউনলোড করে তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর স্ব-হস্তে স্বাক্ষরসহ সিভি বানাতে হয়।
তৃতীয় পর্যায়ে আসছে মোটিভেশন লেটার যেখানে আবেদনকারির কাজের অভিজ্ঞতা ও রেফারেন্সসমূহ উল্লেখ থাকে। আবেদনের সাথে গবেষণার প্রস্তাবণা পাঠানো উত্তম কেননা অনেক ক্ষেত্রে বৃত্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার প্রস্তাবণাটি দাবি করে।
এরপর যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাচেলর সম্পন্ন হয়েছে, তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত রিকমেন্ডেশন লেটার সংযুক্ত করতে হয়। ষষ্ঠ ধাপে আবেদনকারী যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধানের নিকট হতে তার স্বাক্ষরসহ একটি রেফারাল লেটার সংযুক্ত করতে হয়।
অতঃপর ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণস্বরূপ আইএলটিএস এর স্কোরের সনদপত্র আপলোড করতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জার্মান ভাষার সনদপত্র যুক্ত করতে হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনেই সকল সফট কপি নিয়ে নেয়। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় হার্ড কপিও পাঠাতে বলে যেখানে সরকারি ডাক বা ডিএইচএল-এর মাধ্যশে হার্ডকপি পাঠানো যেতে পারে।
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যবহারিক জ্ঞান ও গবেষণাধর্মী কাজের জন্য সেরা জায়গা। তাই বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিমেষেই জার্মানিতে বৃত্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। জার্মান ভাষায় ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে গোথ ইন্সটিটিউট, ডিইউও’র অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটে সুযোগ আছে জার্মান ভাষা শিক্ষার।
Discussion about this post