নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫০ কোটি টাকার বই কেনার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। বই কেনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকার অভিযোগ দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট লেখকের দেয়া বিবৃতি আমলে নিয়ে এ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। একই সাথে লেখকরা সব প্রকাশককে বইয়ের তালিকা জমা দেয়ার সুযোগ দিয়ে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বই নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
রোববার (২৭ জুন) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, লেখকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বই কেনার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে বই কেনার প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে।
এর আগে গত ২৪ জুন এক বিবৃতিতে মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫০ কোটি টাকার বই কেনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট লেখক। বিবৃতি তারা বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বই কেনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, করোনাকালে সৃজনশীল প্রকাশকরা দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এ সময় বই কেনার সংবাদ লেখক, প্রকাশক সবার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন লেখক-প্রকাশক এর সুফল ভোগ করবে আর দেশের বৃহৎ সংখ্যক লেখক-প্রকাশক সরকারের সুফল থেকে বঞ্চিত হবেন এই অন্যায় মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের অস্বচ্ছ কাজ সমর্থনযোগ্য নয়। বাংলাদেশের অনেক লেখক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বই লিখেছেন। বই কেনার আগে সেসব বই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আনা আবশ্যক।
তাই, বই কেনার প্রক্রিয়া স্থগিত করে সব প্রকাশককে বইয়ের তালিকা জমা দেয়ার সুযোগ দেয়া ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বই নির্বাচন করে দ্রুত বই কেনার আহ্বান জানানো হয়েছিল বিবৃতিতে। অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের জন্য প্রতি বছর যে পদ্ধতিতে বই কেনা হয়, প্রাথমিকেও সে পদ্ধতি অনুসরণ করে বই কেনার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। লেখকদের দাবি, সৃজনশীল প্রকাশকদের কাছে উপযুক্ত বইয়ের তালিকা ও নমুনা কপি জমা নেয়া হোক। দেশের বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী, প্রকাশক সমিতির প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সমন্বয়ে বই নির্বাচন কমিটি গঠন করে বইকেনা আবশ্যক। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে করোনার দুঃসময়ে কোনো ধরনের অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা আমাদের কাম্য নয়।
বিবৃতি দেয়া লেখকরা হলেন- হাসান আজিজুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, সেলিনা হোসেন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন, মুনতাসীর মামুন, আনিসুল হক, আবুল আহসান চৌধুরী, রামেন্দু মজুমদার, আবুল মোমেন, সুব্রত বড়ুয়া, মোরশেদ শফিউল হাসান, অসীম সাহা, ফরিদুর রেজা সাগর ও আমীরুল ইসলাম। তাদের পক্ষে বিবৃতিটি দিয়েছেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ।
Discussion about this post